বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মীর মানসিক স্বাস্থ্য:
বাংলাদেশে অভিবাসী কর্মীর সংখ্যা ক্রমবর্ধমান, এক পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জটিলতা। নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যাবার পরে যেমন এক ধরনের অভিযোজনের মধ্য দিয়ে যেতে হয় তেমনি নিজ দেশে ফেরত আসার পরে ব্যক্তিকে আবার ও সমাজ এবং পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেবার বিষয়টি সামনে চলে আসে। এই অভিযোজন প্রক্রিয়া সবার জন্য সমান হয় না। নানান কারনে একজন বিদেশ ফেরত অভিবাসী বিভিন্ন ধরনের মানসিক অসবিধার সম্মখীন হয়ে থাকেন।
বিদেশ গমনের পর্বের মানসিক অবস্থা :
বিদেশ গমনের পর্বেই একজন ব্যক্তি বেশ কিছ বিষয়ের কারনে উদ্বিগ্ন হতে পারেন যেমনঃ
- পরিবার ছাড়া একা নতন পরিবেশ
- ভাষাগত অসবিধা
- অর্থনৈতিক অসবিধা
- সামাজিক বাধা এবং অন্যান্য।
আর্ন্তজাতিক শ্রম সংস্থার এক সাম্প্রতিক গবেশনায় দেখা গেছে, ৪৫% বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মী বিদেশ গমনের পর্বেই এ ধরনের মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে যান যা, তাদের দেশে ফেরার পর মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ঝকি বদ্ধি করে।
কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপঃ
অধিক কর্মঘন্টা, স্বল্প বেতন এবং প্রতিকল কর্মক্ষেত্র একজন অভিবাসীর মানসিক স্বাস্থ্য ঝকি বাড়িয়ে দেয়। বাংলাদেশ ইনিষ্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ এর গবেষনায় দেখা গেছে ৪২% বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মী কর্মক্ষেত্রে চাপ অনভব করেন যা বিষন্নতা,
উদ্বিগ্নতাসহ অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অসবিধা তৈরির কারন হিসাবে কাজ করে।
একাকীত্ব:
পরিবার, পরিজন, বন্ধ কাছের মানষ এবং পরিচিত মখ থেকে দরে থাকা একজন অভিবাসী কর্মীর মানসিক স্বাস্থ্য ঝকি বহুগুনে বদ্ধি করে। বাংলাদেশ সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট জার্নালিজম এ্যান্ড কমিউনিকেশন এর এক সমীক্ষায় দেখা যায় ৪৮% বাংলাদেশী
অভিবাসী কর্মী বিদেশে যারা অসহায়, একাকীত্ব এবং বিচ্ছিন্ন অনভব করেন।
মানসিক আঘাত/ট্রমা:
কোন কোন ক্ষেত্রে অভিবাসন প্রক্রিয়া অভিবাসন কর্মীর ক্ষেত্রে নেতিবাচক অভিজ্ঞতার হতে পারে এবং মানসিক আঘাত যদি তীব্র হয় তা দীর্ঘস্থায়ী মানসিক জটিলতার তৈরি করতে পারে। বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রটিং এজেন্সীস এর এক সমীক্ষা অনযায়ী ২৬% বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মী তীর্ব মানসিক আঘাত প্রাপ্তির কথা জানিয়েছেন। যা দীর্ঘস্থায়ীভাবে মানসিক জটিলতার ঝকি তৈরি করছে।
অর্থনৈতিক সংকটঃ
অর্থনৈতিক সংকট ক্ষতিগ্রস্থ বিদেশ ফেরত অভিবাসী কর্মীর মানসিক স্বাস্থ্য দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নিঃস্ব অবস্থায় দেশে ফেরা, ঋনের বোঝা, কাজের অভাব সব মিলিয়ে এ অসবিধা মানসিক স্বাস্থ্য কে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে। বাংলাদেশ হেলথ এ্যান্ড ওয়েলবিয়িং সার্ভে এর এক জরীপে দেখা গেছে ৬০% বিদেশ ফেরত বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মী আর্থিক দৈন্যতার ভেতর
দিয়ে যাচ্ছেন যা দীর্ঘস্থায়ী মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরির পেছনে বড় কারন হিসাবে কাজ করে।
পারিপাশ্বিক সহযোগিতার আওতাঃ
দেশে ফিরে নিজের সমাজে অভিযোজনের ক্ষেত্রেও অভিবাসী কর্মী অসবিধার সম্মখীন হয়ে থাকেন। নিজ সমাজ ও সম্প্রদায় অনেক কারনেই বিদেশ ফেরত অভিবাসীকে পনরায় অভিযোজিত হবার ক্ষেত্রে অসহযোগী মনোভাব প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ মিনিষ্ট্রি
অব এক্সপ্যাট্রিয়েটীস ওয়েলফেয়ার এ্যান্ড ওভারসীজ এমপ্লয়মেন্ট এর এক রিপোর্টে দেখা গেছে ৪৫% বিদেশ ফেরত বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মী নিজ সমাজ ও সম্প্রদায়ে পনরেকত্রীকরন প্রক্রিয়ার উদ্বেগ ও বিহ্বল অনভব করেন যা বিষন্নতা ও উদ্বেগ এর মত মানসিক অসবিধা তৈরি করেন। বাংলাদেশ সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট জার্নালিজম এ্যান্ড কমিউনিকেশন এর এক জরীপে দেখা গেছে ৪৮% ক্ষতিগ্রস্থ বিদেশ ফেরত বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মী তাদেও নিজ সমাজে অবহেলিত এবং অবজ্ঞার শিকার যা তাদেও আত্মবিশ্বাসে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং ত্রুটিপর্ন মানসিক স্বাস্থ্যেও কারন।
এ সকল চ্যালেঞ্জ নিরসওে প্রয়োজন মানসিক স্বাস্থ্য সেবার পরিধি বাড়ানো। বিদেশ ফেরত কর্মী এবং তার পরিবারের সদস্যদেও মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান , মানসিক স্বাস্থ্য ও গুরুত্ব তলে ধওে সচেতনতা বদ্ধি। ক্রমবর্ধমান মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিরসনে বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান নিয়মিতভাবে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান কওে যাচ্ছে।