আত্মবিশ্বাস কি ?
আত্মবিশ্বাস কি ?

আপনি ঘুম থেকে উঠে রান্না করতে যাচ্ছেন, চুলা জ্বালাচ্ছেন, দিনের অন্যান্য কাজ অনায়াসে করে ফেলছেন। এগুলো আপনাকে তেমন ভাবাচ্ছেনা, কারণ, আপনি জানেন, আপনি এই কাজগুলো পারেন এবং পারবেন। এটাই আত্মবিশ্বাস। যে কোন বিষয়ে নিজের প্রতি যৌক্তিক, ইতিবাচক মনোভাবই আত্মবিশ্বাস এর ধারণা।

আত্মবিশ্বাস থাকলে জীবন পরিচালনা সহজ হয়। আত্মবিশ্বাস অভাব জীবনের পদক্ষেপগুলো কঠিন অনুভূত করায়।

আত্মবিশ্বাস এর ভারসাম্য বজায় রাখতে আমরা কিছু বিষয় দৈনন্দিনভাবে চর্চা করতে পারি:

১/ আত্মবিশ্বাস এর অভাব অনুভূত হলে তার পেছনের কারণ খুঁজে বের করা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া

২/ দক্ষতা ও গুণাবলী আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, তাই নিজের দক্ষতা ও গুণাবলী সম্পর্কে জানা জরুরী, সর্বোপরি, নিজেকে জানা জরুরী।

৩/ দৈনন্দিন জীবনে বাস্তবসম্মত চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গির চর্চা উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ, নিজেকে বা নিজের পরিস্থিতি অন্যদের সাথে তুলনা না করা, নেতিবাচক অভিজ্ঞতাকে নেতিবাচকভাবে না দেখে বরং সেখানে কি পরিবর্তন থাকলে নেতিবাচক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হতোনা তা ভাবা, অর্থ্যাৎ, অতীত থেকে শেখা।

৪/ ইতিবাচক সম্পর্কের বৃত্ত গড়ে তোলা আমাদের জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পরিবার, আত্মীয়, বন্ধু,

প্রতিবেশী অনেক সম্পর্কের অবদান থাকে যা আমাদের মানসিক শক্তি হিসেবে কাজ করে এবং আত্মবিশ্বাস বজায় রাখতে সাহায্য করে।

৫/ যে কোন আচরণের পূর্বে তার ফলাফল কি হতে পারে তা ভেবে নেয়া

৬/ সময়ের যথাযথ ব্যবহার করা অর্থ্যাৎ, পরিকল্পনা করা এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা

৭/ প্রতিনিয়ত নিজের ব্যক্তিত্বের উন্নয়নে কাজ করা অর্থ্যাৎ, প্রতিদিন নতুন কিছু শেখা, নিজের ভুলত্রুটির দায়িত্ব নেয়া, কারো সম্পর্কে না জেনেই শুধুমাত্র ধারণার ওপর ভিত্তি করে কারো সম্পর্কে কোন অভিমত না দেয়া, ব্যক্তিত্ব পরিমার্জনে অন্যদের মতামত ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করা এবং নিজের ভেতর প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনয়নে কাজ করা

৮/ যোগাযোগ দক্ষতা বহুগুণে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। অর্থ্যাৎ, আমরা যখন কারো সাথে যোগাযোগ করব তখন আমরা নিজেদের এবং অন্যদের দুই পক্ষের অধিকার নিশ্চিত যেন হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা, সহমর্মিতামূলক যোগাযোগ ইতিবাচক সম্পর্কের বৃত্ত গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

৯/ হাল না ছাড়ার মনোবৃত্তি আত্মবিশ্বাস বজায় রাখতে সাহায্য করে।

১০/ নিজের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হওয়া

১১/ নিজের প্রচেষ্টা এবং সাফল্যগুলোকে স্বীকৃতি দেয়া

১২/ ভুল হলে নিজেকে দোষারোপ না করে নিজের ইতিবাচক আত্মসমালোচনা করা

১৩/ অতীত এবং ভবিষ্যৎ এর কথা প্রয়োজনের অতিরিক্ত না ভেবে  বর্তমানে মনোযোগী হওয়া

১৪/ বিভিন্ন ধরণের রিল্যাগজেশন চর্চা করা যা মনকে শান্ত থাকতে  সাহায্য করে এবং মন শান্ত থাকলে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়

১৫/ আত্মবিশ্বাস ব্যক্তিবর্গ এর জীবনী অনুসরণ করা

১৬/ ব্যর্থতাকে সুযোগ হিসেবে দেখা

১৭/ আবেগ পরিচালনায় নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তোলা

১৮/ যখনকার কাজ তখন করে ফেলা

১৯/ প্রতিদিন নিজের জন্য সময় রাখা, আজ কি অর্জন হল তা মনে করা এবং পরের দিনের পরিকল্পনা করে ফেলা

২০/ কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে এসে নিজেকে, নিজের  দক্ষতাগুলোকে আবিষ্কার করা  আত্মবিশ্বাস সবসময় বংশগত নয়, এটি একটি জীবনদক্ষতা। আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে এই বিষয়গুলোর দৈনন্দিন চর্চা নিজের প্রতি বিশ্বাসকে স্থায়ী হতে সাহায্য করবে। এছাড়াও প্রয়োজনে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের

সহযোগিতা নিয়ে নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়া যেতে পারে।

Moner Jotno