প্যানিক অ্যাটাক
প্যানিক অ্যাটাক

প্যানিক অ্যাটাক হলো এমন একটি রোগ যার কারণে একজন মানুষ হঠাৎ অতিরিক্ত উদ্বেগ এবং ভয় অনুভব করে। এসময় তার হৃদপিণ্ড থমকে যায় বলে মনে হয় এবং নিঃশ্বাস নিতে পারেনা। এমনটা মনে হয় যেন সে পাগল হয়ে যাচ্ছে অথবা মারা যাচ্ছে। প্যানিক এটাকের যথাযথ চিকিৎসা করা না হলে এটি প্যানিক ডিসর্ডারের দিকে ধাবিত হয় এবং অন্যান্য জটিলতাও সৃষ্টি করতে পারে। এর কারণে এমনকি একজনের দেহের সাধারণ কার্যাবলিও থমকে যেতে পারে। কিন্তু যদি দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া হয় তাহলে প্যানিক অ্যাটাক সমস্যাটি দূর হয়ে যেতে পারে অথবা এর প্রকোপ কমানো যেতে পারে এবং পরবর্তীতে একজন সাধারণ জীবনযাপনও করতে পারেন।

প্যানিক অ্যাটাক কী
প্যানিক অ্যাটাক হলো অপ্রত্যাশিত ভয় যা একজন মানুষকে ভয়ের অতিশায্যে নিয়ে যায়। কোনো আগাম বার্তা ছাড়াই এটি একজন মানুষকে আক্রমণ করে। এমনকি একজন বিশ্রামরত অথবা ঘুমন্ত মানুষকেও এটি আক্রমণ করতে পারে।
প্যানিক অ্যাটাক কারো জীবনে কখনো হয়তো এক-দুইবার ঘটে থাকে। কিন্তু এমন কিছু মানুষ আছে যাদের কিছু দিন পরপরই প্যানিক অ্যাটাক হয়। পুনঃপুন প্যানিক অ্যাটাক সাধারনত কিছু নির্দিষ্ট কারণে বা পারিপার্শ্বিকতায় হয়ে থাকে। বিশেষত পূর্বে প্যানিক অ্যাটাক হয়েছে যে পারিপার্শ্বিক অবস্থায়, সেই অবস্থায় যদি সে পড়ে তাহলে আবার প্যানিক অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ এমন কোনো ঘটনা যা কাউকে পূর্বে বিপদে ফেলেছিল এবং সে তা থেকে বেরুতে পারেনি এমন অবস্থায় পড়লে প্যানিক অ্যাটাক হতে পারে।
যে কেউই জীবনে এক দুইবার এই প্যানিক এটাকের শিকার হতে পারে। এছাড়া কারো আবার অন্যসব ব্যাধি যেমন ভয়, সামাজিক ভীতি অথবা হতাশা থেকে এই প্যানিক অ্যাটাক দেখা দিতে পারে।

প্যানিক অ্যাটাক এবং ডিসঅর্ডার কি?

প্যানিক অ্যাটাক এবং ডিসঅর্ডার হলো এক প্রকার উদ্বেগজনিত অসুস্থতা। যখন আপনি প্যানিক অ্যাটাক অনুভব করবেন তখন ব্যাক্তি এটা মনে করতে পারেন যে তারা নিজেদেরই প্রতিক্রিয়া বা আবেগের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছেন। একটা গভীরতর দুশ্চিন্তাময় পর্ব প্যানিক অ্যাটাক হিসাবে পরিচিত। এই প্যানিক অ্যাটাক যদি কারও মাসে ৪ বার হয় অথবা একবার হওয়ার পর যদি সব সময় মনে একটি ভয় কাজ করে যে আমি বোধহয় মরে যাব, আমি বোধ হয় অজ্ঞান হয়ে যাব, তাহলেই সেটিকে তখন প্যানিক ডিজঅর্ডার বলা হয়।

এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলো কি কি?

প্যানিক অ্যাটাকের সময় ব্যক্তি বেশ কিছু উপসর্গ অনুভব করেন, যেমন

  • প্রচন্ড নার্ভাস হওয়া
  • প্রচন্ড ভয় পাওয়া
  • মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা
  • বমি বমি ভাব
  • দ্রুত হৃদস্পন্দন
  • বুকে ব্যথা
  • শ্বাসকষ্ট
  • অতিরিক্ত ঘাম হওয়া
  • ঝিমুনিভাব
  • দূর্বলতা
  • মরে যাওয়ার ভয় পাওয়া
     

এটি কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?

এই রোগটি একজন মনরোগবিশেষজ্ঞের দ্বারাই নির্ণীত হয়। প্যানিক রোগ ঠিক করার জন্য ব্যাক্তিকে তার নিজস্ব উপসর্গের উপর নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয় বিভিন্ন শিথিলায়ন অনুশীলনের মাধ্যমে। মানসিক চাপ দূর করতে কাউন্সিলিং করা হয় ও কগনিটিভ বিহ্যাবিয়ার থেরাপীর দ্বারা চিকিৎসা করা হয়।

গুরুতর অবস্থায় ওষুধের দরকার পড়ে। এইসব ক্ষেত্রে সাধারণত উদ্বেগ কমানোর ওষুধ দেওয়া হয়।

এটা জানা দরকার যে প্যানিক রোগটি প্রাণঘাতি ব্যাধি না, কিন্তু একজনের আত্মবিশ্বাসের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং সময়মত সহায়তা ও সচেতনতার সাহায্যে প্যানিক রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।


 



 

Moner Jotno