আজকাল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার করে দেয়া মানুষের সংখ্যা কিন্তু কম নয়। স্ক্রিন আসক্তির কারণে অনেকেরই ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবন ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না এ আসক্তি থেকে বের হওয়ার পথ কি?
📌১. নিজের স্ক্রিন আসক্তি সম্পর্কে সচেতনতা এবং এটি যে সমস্যা তা মেনে নেওয়া:
আপনার স্ক্রিন আসক্তির পরিমাণ কেমন তা জানুন এবং স্বীকার করুন। এর জন্যে স্ক্রিন টাইম ট্র্যাক করা বা স্ক্রিনে কাটানো সময় নোট করে রাখুন।
আপনার স্ক্রিন আসক্তির কারণে সৃষ্ট সমস্যাগুলো বুঝুন এবং চিহ্নিত করুন।
শারীরিক সমস্যা
(চোখে চাপ অনুভুত হওয়া, ঘুমের ব্যঘাত হওয়া),
মানসিক সমস্যা
(বেশী উদ্বেগ, মেজাজের ওঠানামা), এবং সামাজিক সমস্যা
(সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ কমে যাওয়া)
📌২. স্ক্রিনে কাটানো সময় নিয়ে একটি পরিষ্কার লক্ষ্য স্থাপন করুন:
কাজ, অবসর, এবং প্রয়োজনীয় যোগাযোগ বিবেচনা করে আপনার জন্য যুক্তিসঙ্গত স্ক্রীন টাইম কেমন হবে তা নির্ধারণ করুন।
📌৩. পরিষ্কার সীমানা সেট করুন:
স্ক্রীন-মুক্ত সময় নির্ধারণ করুন। যেমন, ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথম ঘন্টা এবং ঘুমাতে যাওয়ার আগে শেষ ঘন্টায় কোনও স্ক্রিন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। স্ক্রিন-মুক্ত অঞ্চল চিহ্নিত করুন। যেমন, বেডরুম এবং ডাইনিং টেবিল স্ক্রিন-মুক্ত অঞ্চল হিসাবে চিহ্নিত করুন। প্রয়োজনে ব্যবহার করলেও নিয়মিত বিরতি নিন। প্রতি ঘণ্টার পরে, কমপক্ষে ৫-১০ মিনিটের বিরতি নিন।
📌৪। স্বাস্থ্যকর ডিজিটাল পরিবেশ ডিজাইন করুন:
ডিভাইসগুলিকে হাতের নাগালের বাইরে রাখুন।
আপনার মোবাইলের অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ ডিলিট করে দিন এবং অপ্রয়োজনীয় বিজ্ঞপ্তি বন্ধ বা বিভ্রান্তিকর ওয়েবসাইটগুলিতে অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধ করে রাখুন।
📌৫. অনলাইন এবং অফলাইনের মধ্যে ভারসাম্য রাখুন:
ডিজিটালের চেয়ে মুখোমুখি সংযোগ এবং বাস্তব-জীবনের মিথস্ক্রিয়াকে অগ্রাধিকার দিন। শারীরিক ক্রিয়াকলাপ যেমন নিয়মিত ব্যায়াম বা ক্রিয়াকলাপে নিযুক্ত হতে পারেন। অফলাইন শখ, যেমন পড়া, পেইন্টিং, বাগান করা, বা অন্য কোনও নন-স্ক্রিন ভিত্তিক কার্যকলাপে সময় দিতে পারেন।
📌৬. একটি রুটিন তৈরি করুন:
ইমেল, সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্যান্য ডিজিটাল প্লাটফর্ম এর নোটিফিকেশন চেক করার জন্য নির্দিষ্ট সময় সেট করে রাখুন।
📌৭. শিশুদের জন্য শিক্ষা দিন এবং নির্দেশিকা সেট করুন:
আপনি যদি একজন অভিভাবক হন, তাহলে আপনার বাচ্চাদের জন্য স্ক্রিন টাইমের স্পষ্ট সীমারেখা সেট করুন। বাইরের কার্যকলাপ এবং অফলাইন গেম খেলতে উৎসাহিত করুন।
📌৮. জানতে থাকুন:
অতিরিক্ত স্ক্রীন টাইমের প্রভাব সম্পর্কে আরও জানার চেষ্টা করুন। আপনি যত বেশি জানবেন, সমস্যাটি সমাধানের জন্য আপনি তত ভালভাবে অগ্রসর হবেন।
📌৯. নিয়মিতভাবে পুনরায় মূল্যায়ন এবং সামঞ্জস্য করুন:
নিয়মিতভাবে আপনার স্ক্রিন টাইম অভ্যাস পর্যালোচনা করুন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী আপনার কৌশলগুলি সামঞ্জস্য করুন।
📌১০. মানসিক পেশাজীবীর পরামর্শ:
যদি স্ক্রিন আসক্তি আপনার জীবনকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে তবে মানসিক পেশাজীবীর পরামর্শ বিবেচনা করুন।