বিগত কয়েকদিনে বেশ কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বেশ সাড়া ফেলেছে। নরসিংদীতে গত বছর আমরা দেখেছিলাম যে কিছু মানুষ একজন মেয়েকে তার পোশাক এর জন্য নির্যাতন করেছিলো।
এই যে মেয়েরা খোলামেলা পোশাক পড়বে না এই চিন্তা থেকে অন্য একজনের উপর চড়াও হওয়া এবং তার উপর নিজস্ব চিন্তা ভাবনা চাপায় দেয়ার নাম ই “মোরাল পুলিশিং”।
“মেয়েরা ঘরেই থাকবে, তাদের বাইরে চাকরি করতে দেয়া যাবে না, ছেলে মানুষের সব সময় দায়িত্ব নিতে হবে, ছেলেরা কাঁদতে পারবে না, মেয়ে মানুষ স্মোক করতে পারবে না, মেয়েরা বেশি শিক্ষিত হলেই সংসার করতে চাইবে না, তাই তাদের জলদি বিয়ে দিয়ে দিতে হবে, বিয়ের সাথে সাথে বাচ্চা নিয়ে নিতে হবে নয়তো জামাইকে হাত করে রাখা যাবে না, সম সময় হাজবেন্ড কে সন্তুষ্ট রাখতে হবে না হলে তার মন পাওয়া যাবে না”
এছাড়াও আরো অনেক চিন্তা ভাবনা আছে যা আমাদের সমাজে প্রচলিত এবং আমরা কিন্তু যুগের পর যুগ এইসব এ শুনে আসছি আবার মেনেও যাচ্ছি। যেই এই প্রচলিত প্রথার বাইরে যায় অথবা অন্যথা হয় তখন ই কিন্তু শুরু হয় মোরাল পুলিশিং যাকে আমরা বলি জাজমেন্টাল হয়ে যাওয়া।
জাজমেন্টাল হওয়া আর মোরাল পুলিশিং কিন্তু এক না। আপনি হয়তো এক্সট্রা ম্যারিটিয়াল এফেয়ারে জড়িয়ে পড়েছেন এটা শুনে আপনার ফ্রেন্ড বললো যে কাজ টা ঠিক না, পরে অনেক ঝামেলা হবে, যারা এইসব করে তারা আসলে ভালো মানুষ না......এটা হচ্ছে জাজ করা আর অন্য একটা ফ্রেন্ড বললো, তুই এটা খুব ই খারাপ করছিস, নষ্ট হয়ে গেছিস, তোকে এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে, এরপর এটা করবি, সেটা করবি না হলে সংসার টিকবে না, বেশি পড়ালেখা করে তোর মাথাটাই নষ্ট হয়ে গেছে, নিজেকে সামলায় নে ইত্যাদি .........এটা হচ্ছে মোরাল পুলিশিং।
যারা এই ধরনের মোরাল পুলিশিং এর স্বীকার হয়ে থাকেন তাদের মধ্যে কিন্তু নিজেকে নিয়ে অনেক নেগেটিভ চিন্তা আসতে থাকে, আর অনেক সময় কেউ চাইলেও নিজের মনের কথা এই ধরনের ভয়ে আর কাউকে খুলে বলতে পারেন না। ফলে মানসিক যন্ত্রনা টা রয়েই যায়।